বাংলাদেশের ১৮৯টি প্রাচীন প্রত্নসামগ্রী ফ্রান্সে প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভিতরে যখন তুলকালাম কান্ড- ঘটছিল, তখন ওই প্রদর্শনীর আয়োজক প্যারিসের গিমে জাদুঘরটিকে আমি কল্পনায় আঁকার চেষ্টা করছিলাম। এটা আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। বদভ্যাসও বলা যায়। বাস্তবের সঙ্গে মিলুক না মিলুক, মনের ক্যানভাসে আলোচ্য স্থানের ছবি আঁকা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমার অন্তরে স্বস্তি আসে না। সেই অভ্যাস তুলির টানেই আমার মানসপটে আঁকা হয়ে গিয়েছিল প্যারিস নগরীর এক নির্জন প্রান্তে অবস্থিত গিমে জাদুঘরের কালো ছায়াঘেরা একটি স্ট্রাকচার। বলাবাহুল্য, সেই স্ট্রাকচার বা কাঠামোটা গড়ে উঠেছিল আমাদের জাতীয় জাদুঘরের আদলকে ঘিরেই। পরে বুঝেছি, আমি যে আমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে গিয়ে জাদুঘরটিকে প্যারিস নগরীর কোনো এক নির্জন প্রান্তে অবস্থিত বলে কল্পনা করেছিলাম, তার প্রথম কারণটি যদি আমার কৈশোরে প্রচুর গোয়েন্দা-সাহিত্যপাঠের ফল হয়, তবে দ্বিতীয় কারণটি নিহিত ছিল ওই জাদুঘরের সঙ্গে আমাদের সরকার কর্তৃক সম্পাদিত চুক্তির ব্যাপারে দেশবাসীকে যথাসম্ভব অন্ধকারে রাখার সচেতন প্রয়াসের মধ্যে।
আমি গিয়ে জাদুঘরটির কথা যখন কল্পনা করছিলাম, আমার মনে পড়েছিল ১৯৮২ সালে হ্যানয়ে দেখা ‘যুদ্ধ জাদুঘরটির কথা, যেখানে ইতিহাসখ্যাত দিয়েন বিয়েন ফু-র (১৯৫৪) যুদ্ধের অনেক চাঞ্চল্যকর নিদর্শন আমি বিশেষ আগ্রহ সহকারে নিজ চোখে দেখেছি। মার্কিনীদের তো রয়েছেই, ফরাসিদের অপকর্মের বহু নিদর্শনও সযত্নে রক্ষিত আছে সেই যুদ্ধ-জাদুঘরটিতে। |
|